বেদের কর্মী

বালক ঠাকুর প্রসঙ্গে লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বালক ঠাকুর প্রসঙ্গে লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১

কে এই বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ

# পুস্তক সূত্র ঃ ত্বম্ হি গতিসত্তম্ # ১৩২৭ সালের ২৩শে কার্তিক পৃথিবীর ইতিহাসে এক পরম শুভদিন। ঢাকা বিক্রমপুরের মেদিনীমণ্ডল গ্রামে ঘোর অমানিশা কালীপূজার লগ্নে ১০টা ২০ মিনিটে যিনি এই ধরায় অবতীর্ণ হলেন, তিনি কে ? এ প্রশ্ন সেদিনও অনেকের মনে জেগেছিল, আজও জাগছে। বৈদিক বাড়ীর কালীপূজা বিখ্যাত, মহাসমারোহে প্রতিবছর উদযাপিত হয়। আত্মীয়-অভ্যাগতদের ভিড়ে বাড়ী জমজমাট। আসন্নপ্রসবা মাতা চারুশীলা সারাদিন রান্নাঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। রাত্রে পূজামণ্ডপের দিকে যাচ্ছিলেন। এমন সময় শুনতে পেলেন তন্ত্রধার ভগবতী ঠাকুর (শ্রী শ্রী ঠাকুরের জেঠামশায়) চিৎকার করছেন , "লগ্ন বয়ে যাচ্ছে। মিষ্টির থালা কই ?" সামনে ছিলেন মাতা চারুশীলা। চিনির থালা হাতে করে ত্রস্তপদে এগিয়ে গেলেন পূজামন্ডপের দিকে। উঠোনে নেমে দু' এক পা যেতে না যেতেই হোঁচট খেলেন। চিনির থালা হাত থেকে পড়ে গেল। কি হয়েছে বুঝবার আগেই দেখেন, একটি জ্যোতির্ময় শিশু মাটিতে শুয়ে হাত পা ছুঁড়ছেন, বুঝে-ভরা দৃষ্টিতে পরিবেশ বিচার করছেন। শরীরে তাঁর কোন ক্লেদ-পঙ্কিলতার চিহ্ন নেই। মনে হচ্ছে, যেন কেউ তখনই স্নান করিয়ে শিশুটিকে শুইয়ে দিয়ে গেছে। কিন্তু শিশু কোন শব্দ করছেন না। সাতবার শঙ্খধ্বনি করে মহিলারা জানিয়ে দিলেন পুত্রসন্তানের শুভাগমন। ভগবতী ঠাকুরের হাত থেকে ঘন্টা পড়ে গেল ---- সর্বনাশ! অশৌচ! মায়ের পূজায় বিঘ্ন হলো। নিরীহ ছাগশিশু হয়তো সেদিন যূপকাষ্ঠের থেকে মুক্তি পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। শিশুঠাকুরের আবির্ভাবের মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনা হচ্ছে যে, মাতা চারুশীলা কোন প্রসব বেদনাই অনুভব করেন নি। বিনা প্রসব বেদনায় সুপ্রসব হয় না ---- এটাই সাধারণ নিয়ম। তাছাড়া মাতৃজঠরে দশ মাস দশ দিন কূর্মাসনে থেকে যখন শিশু ভূমিষ্ঠ হয়, তার দেহ থাকে ক্লেদ-পঙ্কিলতায় ভরা। তাই জন্মের পরে শিশুর দেহ ধুয়ে পরিষ্কার করতে হয়। শিশু ঠাকুরের বেলায় এখানেই পরম আশ্চর্য ----- আবির্ভাব মুহূর্তেই তাঁর দেহ ছিল নির্মল শুচিশুভ্র, যেন সেই মুহূর্তে কোন অদৃশ্য শক্তি তাঁকে স্নান করিয়ে শুইয়ে দিয়ে গেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, তিনি কি মাতৃজঠর থেকেই ভূমিষ্ঠ হন, না অন্য কোন অজানা শক্তির প্রকাশে আবির্ভূত হন। পূজামন্ডপে আলো ছিল ঠিকই, কিন্তু প্রাঙ্গণে তেমন আলো ছিল না। সেই আলো-আঁধারি পরিবেশের মধ্যেও শিশুর দেহ আপন জ্যোতিতে ঝলমল করছে। তাঁর বুঝে-ভরা নয়ন-যুগল সবার গতিবিধি লক্ষ্য করছে --- এর কোনটাই সাধারণ নবজাতকের মধ্যে দেখা যায় না। পরবর্তীকালেও তাঁর দেহনিঃসৃত জ্যোতির আলোয় তাঁর সাথীরা অন্ধকার জঙ্গলাকীর্ণ পথ অতিক্রম করেছে, এমনকি সেই আলোয় কেউ কেউ পড়াশুনাও করেছে। সুতরাং শিশুঠাকুরের আবির্ভাব যে চিরাচরিত স্বাভাবিক জন্মের পর্যায়ে পড়ে না, সেটি যেমন কয়েকজনের কাছে সেদিন ফুটে উঠেছিল, আজও তেমনি সূক্ষ্ম-বিচারে ফুটে উঠছে। তবে চারুশীলারূপী মা যশোদা যাঁকে সন্তানজ্ঞানে কোলে তুলে নিয়েছিলেন, সে শিশুটি কে এবং কিভাবে এলেন ? ..... যাই হোক, জন্মমুহূর্তের ঘটনাবলী অনুধাবন করলে দেখা যায়, শিশুঠাকুর মাটিতে শুয়ে হাত পা ছুঁড়ছেন, চারিদিকে লক্ষ্য রাখছেন, কিন্তু তখনও পর্যন্ত কোন শব্দ করেন নি। আত্মীয় অভ্যাগতরা আসন্ন কালীপূজার উৎসব থেকে বঞ্চিত হয়ে ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েছেন আর শিশুর সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছেন। কেউ বলছেন, " এ কোন্ কালাপাহাড় এলো, মায়ের পূজা পণ্ড করে দিল ? " আবার কেউ বলছেন, " একটা বোবা ছেলে এসে মায়ের পূজা নষ্ট করলো। " শিশু ঠাকুরের দিদিমা শশীমুখী, জেঠীমা মনোরমা দেবী এবং জেঠামশাই সুন্দর ঠাকুর কিন্তু আবির্ভাবের অলৌকিকতা লক্ষ্য করলেন। তাই মনোরমা দেবী হেঁট হয়ে শিশুকে বললেন, "তুমি একবার কেঁদে দেখাও তো, যে তুমি বোবা নও।" শিশু জেঠিমার কথা রাখলেন। তিনবার তারস্বরে চিৎকার করে বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি আর যাই হোন সুরে ভরপুর। দিদিমা শশীমুখী দেবী বুঝেছিলেন যে, এই শিশুর আগমন এক শুভ ইঙ্গিত বহন করে আনছে। তাই তিনি ঘটে ফুল দিয়ে মায়ের পূজা সমাপন করতে নির্দেশ দিলেন। নিষ্ঠাবান বৈদিক বাড়ীতে জন্ম নিয়েও সুন্দর ঠাকুর সব সংস্কার বিসর্জন দিয়ে শিশুর কোষ্ঠী বিচার করতে বসলেন। শাস্ত্রমতে ছয়দিন পার না হলে কোষ্ঠী বিচার করা নিষিদ্ধ। সুন্দর ঠাকুর জ্যোতিষশাস্ত্র বিশারদ হয়েও শাস্ত্রের বিধান উপেক্ষা করলেন। কারণ তিনি বুঝেছিলেন যে, এইভাবে যিনি আসতে পারেন, তিনি অনন্তবিশ্বের নিয়ামক ছাড়া কেউ নয়। সুতরাং তাঁর ক্ষেত্রে কোন বিধানই প্রযোজ্য নয়। কোষ্ঠী বিচার করে আনন্দে আত্মহারা হয়ে সুন্দর ঠাকুর চোখের জল ফেলতে ফেলতে বললেন, " তোমরা সবাই আনন্দ কর। আমাদের সাতপুরুষ উদ্ধার হয়ে গেলো। এঁ কালাপাহাড় নয়, এঁ যে কালাচাঁদ , আজন্ম সন্ন্যাসী। এঁর বৃহস্পতি তুঙ্গে, সব তুঙ্গে ।" সেই মুহূর্তে সেই পাগল সাধক, যিনি মনসা পূজার দিন বলে গিয়েছিলেন, " ওরে সে আসছে রে আসছে " এসে উপস্থিত হলেন । " এসেছে রে এসেছে , আমায় একটু দেখতে দে " ----- বলে তিনি এগিয়ে গেলেন । সবাই তাঁকে ধরলো, " কে এসেছে " বলতে হবে । " পরে বুঝবি, পরে বুঝবি " ----- বলতে বলতে পাগল সাধক দ্রুতপদে চলে গেলেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে অলৌকিক বিভূতির প্রকাশ শিশুবয়স থেকেই ঠাকুরের মধ্যে দেখা যায়। জগতের ইতিহাসে তাঁর তুলনা মেলা দুষ্কর। প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে আজও অনেকে জীবিত। কোন্ ছয়দিন বয়সের শিশু হাত নেড়ে বৃষ্টি ডেকে আনতে পারে, আবার হাত নেড়ে বৃষ্টি বন্ধ করতে পারে ? কোন্ দেড় -- দুই বছরের শিশু গভীর ধ্যানে মগ্ন হয়ে বসে থাকে, যখন আর সকলে গাঢ় নিদ্রায় অচেতন ? কোন্ দুই বছরের শিশু উঁচু দোতলার ছাদ থেকে পালখের মত মন্থর গতিতে রাস্তায় বৃদ্ধের প্রসারিত হাতের উপর অবতরণ করে খিলখিল করে হাসতে পারে ? কোন্ পাঁচ বছরের শিশু নদীর তরঙ্গসঙ্কুল জলরাশির উপর দিয়ে খেলাচ্ছলে হেঁটে যেতে পারে, আবার কখনও বা সেই জলরাশির উপর ধ্যানাসনে উপবিষ্ট হয়ে ভেসে যেতে পারে ? বিভূতির অন্ত নেই তাঁর ......... ! [ পুস্তক সূত্র ঃ ত্বম্ হি গতিসত্বম্, লেখক ঃ রায়দা , বালক ব্রহ্মচারী অর্গানাইজেশন , ব্রহ্মচারী ধাম , সুখচর , ২৪ পরগণা, ( উত্তর ) , প্রকাশ কাল ঃ ৯ই পৌষ, ১৩৯৩ বড়দিন , ( খ্রীষ্টমাস ডে ) , ১ ৯ ৮ ৬ ] রাম নারায়ণ রাম রাম নারায়ণ রাম রাম নারায়ণ রাম পোস্টটি শেয়ার করে নিজের প্রোফাইল এ রেখে দিন কাজে লাগবে।