শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১
বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ এর অভয় বাণী
t# পুস্তক সূত্র ঃ বেদ সূত্রসার #
# এই পৃথিবীকে আমি স্বর্গে পরিণত করে দিয়ে যাবো। পৃথিবীর বুকে যাতে এক মহাশান্তির ঢেউ বয়ে যেতে পারে, আমি তারই ভিত রচনা করছি।
# যারা আমার অত্যন্ত কাছের, আমার nearest ও dearest, আমার কায়ার সঙ্গে ছায়ার মত হয়ে গেছে, আমার কথা শুনেই তাদের যেন সেটা দর্শন হয়ে যাচ্ছে ------- এরকম যখন বুঝতে পারবো, তখন বলবো 'আমার কথা' তাদের কাছে।
# আমি 'হাঁ'তেও থাকি, 'না'তেও থাকি। সাধনার পথে আমি কাউকে কোন কিছু থেকে বঞ্চিত করতে চাই না।
# আমার দেওয়ার মত মন থাকতে পারে ------ আমি অপেক্ষা করে থাকবো ক্ষেত্র তৈরী করা পর্যন্ত, কারণ , ক্ষেত্র প্রস্তুত করাই আমার কাজ। আমি ক্ষেতী, উপযুক্ত জমি বুঝে বুঝে চাষ করে যাই।
# যেন-তেন-প্রকারেণ ক্ষেত্র প্রস্তুত করাই আমার কাজ।
[ পুস্তক সূত্র ঃ বেদ সূত্রসার, জন্মসিদ্ধ ঠাকুর শ্রী শ্রী বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ। পৃষ্ঠা ঃ ১৮০, আংশিক, গ্রন্থনা ঃ ত. চ. ; প্রকাশক ঃ বেদপ্রচারক টিমের পক্ষে, শ্রী হরিবন্ধু পাল, গঙ্গারামপুর, নয়াবাজার , দক্ষিণ দিনাজপুর। ]
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
Tags: Ram Narayan Ram, Beder kormi
বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ এর অভয় বাণী
বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১
বালক ব্রহ্মচারী মহারাজের নির্বিকল্প সমাধি
# পুস্তক সূত্র ঃ বিশ্ববিশ্রুত নির্বিকল্প সমাধি #
*নির্বিকল্প সমাধি ঃ সংবাদপত্রের ভূমিকা*
'নির্বিকল্প সমাধি' বিষয়টা বুজরুকি বলে উড়িয়ে দিতে চান অনেকেই। কিন্তু ভারতের মাটিতে 'নির্বিকল্প সমাধি' কথাটা নতুন নয়। বহু যোগী-ঋষির জীবনে এটি ঘটতে দেখা গেছে। বালক ব্রহ্মচারী মহারাজেরও ১৯৬০ সালে দীর্ঘ ২১ দিন কয়েক ঘন্টা 'নির্বিকল্প সমাধি' হয়েছিল। তার বিবরণ তৎকালীন 'যুগান্তর' ( ১৫ই পৌষ, ১৩৬৭, শুক্রবার) পত্রিকায় যা প্রকাশিত হয়েছিল, তা হুবহু নীচে উদ্ধৃত করা হল : ---
তিন সপ্তাহাধিক কালব্যাপী নির্বিকল্প সমাধি-অবস্থার পূর্ণ অবসান ঘটে গত রবিবার খ্রীষ্টমাস দিবসের সন্ধ্যা ৬-৪০ মিনিটে। সহস্র সহস্র জনসমাগম হওয়া সত্ত্বেও তাঁহার সমাধিভঙ্গের পবিত্র অনুষ্ঠানপর্ব অত্যন্ত শান্ত আবহাওয়ার মধ্যে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। গত একুশ দিন ধরিয়া সহস্র সহস্র ভক্তবৃন্দের মুখমণ্ডলে এক অমঙ্গল আশঙ্কার ছায়াপাত হইয়াছিল ; ধ্যানমগ্ন আত্মসমাহিত অবস্থার ২১ দিন অতিবাহিত হইলে গত শনিবার সকালে চিকিৎসকগণের মতে শ্রীশ্রী ঠাকুরের স্থূল দেহে শ্বাস-প্রশ্বাসক্রিয়া প্রথম সূচিত হয়। ইতিপূর্বে বহুবার পরীক্ষা করিয়া দেখা হইয়াছে যে, তাঁহার মধ্যে নাড়ির স্পন্দন ও শ্বাসক্রিয়ার প্রভাব বিন্দুমাত্র ছিল না। ভক্তবৃন্দের দ্বারা প্রথম প্রথম ফলাদির রস ও জল তাঁর স্থির অচল মুখের মধ্যে প্রবেশ করাইবার জন্য বিশেষ সতর্কতা সহকারে চেষ্টা করা হইয়াছিল ; কিন্তু সবই গড়াইয়া পড়িতেছে দেখিয়া সেই প্রচেষ্টা স্থগিত রাখা হয়। প্রত্যহ দিনরাত্র সহস্র সহস্র দর্শকবৃন্দ তাঁহার সমাধি অবস্থা দর্শন করিয়া আশঙ্কিত হইয়া পড়িয়াছিলেন ; শনিবার সকালে শ্বাসক্রিয়া সূচিত হওয়ার প্রায় ৩৬ ঘন্টার পর শ্রীশ্রী ঠাকুর তাঁহার চক্ষুদ্বয় উন্মিলিত করিলে সমবেত ভক্ত ও দর্শকমণ্ডলীর মধ্যে বিপুল আনন্দের উল্লাসধ্বনি উত্থিত হয়, শত শত নারীকণ্ঠ হইতে নিঃসৃত উলুধ্বনি ও শতশত মঙ্গল শঙ্খধ্বনি শ্রুতিগোচর হইল। ..........
[ পুস্তক সূত্র ঃ বিশ্ববিশ্রুত নির্বিকল্প সমাধি, লেখক ঃ চিত্ত সিকদার, প্রকাশকাল : মহাষ্টমী, ১৪০৭ বঙ্গাব্দ (৫ই অক্টোবর, ২০০০ খ্রীষ্টাব্দ), পৃষ্ঠা ঃ ৬০,৬১, আংশিক ]
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
Tags: Ram Narayan Ram, Beder kormi
balak bhramhachari news
Balak Bramhachari Maharaj
# পুস্তক সূত্র ঃ নাম জপ #
.....যারা দীক্ষা নিতে আসে, তারা তাদের নিজের-নিজের বুঝ নিয়েই প্রথমে আসে। ক্রমে ক্রমে আমি তাদের ব্যাপকতার বুঝে, বিরাটের বুঝে নিয়ে যাই। এখানে যে বলা হয় মন্ত্র জপ করে অনেকের দর্শন বা সিদ্ধি-মুক্তি হয়েছে, কেউ বা মহাপুরুষ হয়েছে অথবা ভগবান পেয়েছে, সে বিষয়ে আমি কিছু বলবো না। সবাই এখানে ঘূর্ণীপাকেই ঘুরছে। তবে এখানে কে যে কোন্ ঘূর্ণীপাকে ঘুরছে, জানি না। যে যে-পাকে ঘুরছে, যা পাচ্ছে পাক। এই ঘূর্ণীপাকের ঘূর্ণীতে আছে যারা, তাদের কথা আমি বেশী কিছু বলি না। আমি practical লোক। যা সত্য, যা বাস্তব, অনন্ত বিশ্বপ্রকৃতি যে জ্ঞানে প্রতিষ্ঠিত ---- সেই সহজ সত্য বস্তুর কথাই আমি বলি। আমি তথাকথিত ধর্মের কথা, অনুভূতি বা দর্শনের কথা, সিদ্ধি-মুক্তির কথা বলিনা। তবে আমার কাছে যে কয়েক কোটি লোক আসে, তাদের একজনেরও তা হয়নি, পরে হবে কিনা জানি না। আমি অত্যন্ত সাধারণ ব্যক্তি। প্রকৃতির কর্মী হয়ে সবার মাঝে কাজ করে যেতে চাই। ভগবান-ভগবান বললেই হল ? সেই ব্যক্তিটি কোথায়, তার ঠিকানাটা কি ----- তা আগে জানতে হবে। আজ পর্যন্ত যাদের সাথে আমার যোগাযোগ হয়েছে, তাদের কেউই ভগবানের ঠিকানা জানতে পারে নি। .....
( পূর্বের ধারাবাহিকতায় )
[ পুস্তক সূত্র ঃ নাম জপ, পৃষ্ঠা ঃ ৫৯, আংশিক, জন্মসিদ্ধ ঠাকুর শ্রী শ্রী বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ, প্রকাশনায় ঃ বালক ব্রহ্মচারী যোগ মন্দির, লিলুয়া, হাওড়া। সম্পাদনা ঃ রামচন্দ্র পাঁজা, প্রকাশকাল ঃ জুন, ২০১৫ । ]
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
Tags: Ram Narayan Ram, Beder kormi
ধর্মীয় প্রশ্নের উত্তর
মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১
বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ এর নির্দেশ
পরমপিতার নির্দেশনা
১) ......এখানে অশান্তির কারণ সাধারণতঃ তিনটি ---- কাঞ্চন, যশ ও কাম। ওদেরও বিষদাঁত যায় ভেঙ্গে যদি তোমার হুঁশ সব সময় মাত্রামাফিক চলে।
২) নিন্দায় যোগদান করো না।
৩) যশের পাল্লায় পড়ে নিজেকে বানচাল করবে না। বাহাদুরি দেখাতে গিয়ে উপহাসের বস্তু হয়ো না।
৪) তোমায় কেউ প্রশংসা করলে অতি মাত্রায় উঠে যেও না, প্রশংসা করলেই তাল হারিও না।
৫) তোমায় যত প্রশংসাই করুক না কেন, আরো ক'রে অযথা আরো নেবার চেষ্টা ক'রো না---- ক্ষতির সম্ভাবনা সেখানে।
৬) অযথা কাউকে ঠাট্টা-টিটকারী ক'রো না, তাতে নিজেকে বাচাল বানানো ছাড়া অন্য কিছু হয় না।
৭) দুনিয়ার সব কিছু দেখবে, শুনবে ও বুঝতে চেষ্টা করবে ; হঠাৎ কোন কিছু বলতে চাইবে না, নিজে না বুঝে না জেনে ; কাহাকেও হঠাৎ কোন কিছু বলে আঘাত দেবে না। বুঝবার চেষ্টা করবে, জানবার চেষ্টা করবে ---- তোমার শিক্ষার মাধুর্য্য সেখানে গিয়ে দাঁড়াবে।
৮) মানীর ও মানের মর্যাদা দিয়ে চলবে।
৯) যে বিষয়ে কেউ অপমানিত হতে পারে সে বিষয়ে কোন কথা জিজ্ঞাসা করবে না।
১০) মন ও অবস্থা না বুঝে হঠাৎ কাউকে কাজের আদেশ দেবে না।
১১) হালকা বাহাদুরি নেওয়ার জন্য কোন কাজ করবে না।
১২) তুমি সব সময় খেয়াল রাখবে তোমা হতে কেউ যেন আঘাত না পায়
১৩) অযথা বাক্য ব্যয় করো না। জানো তো অমিতব্যয়িতা মূঢ়তা ----- কথাতেই হৌক, আর অর্থতেই হৌক । দেখা গিয়েছে অধিক কথায় শান্তি অপেক্ষা অশান্তির উদ্রেক হয়েছে অনেক বেশী।
১৪) একটা কিছু বলার আগে বেশ চিন্তা ক'রে বলবে। বলার ভারসাম্য না থাকলে অস্বস্তিরই মাত্রা বাড়ে।
১৫) একজনের আলাপের সময় আর একজন অসুবিধা করবে না। সেই অভ্যাসে তোমার ধৈর্যগুণেরই সুন্দর বিকাশ হবে।
১৬) ভালো উপদেশ সবা হ'তে গ্রহনীয়। সেখানে মানাপমানের প্রশ্ন না রাখাই সমীচীন, তাতে অপকার অপেক্ষা উপকৃত হবে অনেক বেশী।
১৭) কি শিশু কি বৃদ্ধ ---- যে যা বলে মন দিয়ে আগে তা শুনে নেবে।
১৮) নিজের মনকে সব সময়ে পাঠ বা 'স্টাডি' করবে। তাতে শুদ্ধাশুদ্ধ, ন্যায়ান্যায়, জ্ঞানাজ্ঞান ---- সবটারই একটা মাত্রা নির্ণয় করতে পারবে।
১৯) নিজেকে জানাই 'সব'কে জানা। তুমি তোমাকেই তন্নতন্ন ক'রে খোঁজ, তবেই হবে সব খোঁজা ।
২০) রাজনীতি করার আগে নিজের নীতিকে গড়ো আগে, তখন সেই নীতিতে এসে সব পড়বে, নেতৃত্বের বিকাশ তখনই হবে।
২১) মাত্রা ছাড়িয়ে চললে বিপদের সম্ভাবনা।
২২) তোমরা জ্ঞানের পূজারী, সুন্দরের পূজারী ও গুণের পূজারী ।.......
জন্মসিদ্ধ মহান শ্রী শ্রী বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ।
[ পুস্তক সূত্র ঃ নির্দেশ]
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
Tags: Ram Narayan Ram, Beder kormi
জন্মসিদ্ধ মহানের নির্দেশ
Ram NarayanRam
এ যুগের যুগত্রেতা জন্মসিদ্ধ ঠাকুর শ্রী শ্রী বালক ব্রহ্মচারীমহারাজ
Tags: Ram Narayan Ram, Beder kormi
জন্মসিদ্ধ মহান
কে এই বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ
# পুস্তক সূত্র ঃ ত্বম্ হি গতিসত্তম্ #
১৩২৭ সালের ২৩শে কার্তিক পৃথিবীর ইতিহাসে এক পরম শুভদিন। ঢাকা বিক্রমপুরের মেদিনীমণ্ডল গ্রামে ঘোর অমানিশা কালীপূজার লগ্নে ১০টা ২০ মিনিটে যিনি এই ধরায় অবতীর্ণ হলেন, তিনি কে ? এ প্রশ্ন সেদিনও অনেকের মনে জেগেছিল, আজও জাগছে। বৈদিক বাড়ীর কালীপূজা বিখ্যাত, মহাসমারোহে প্রতিবছর উদযাপিত হয়। আত্মীয়-অভ্যাগতদের ভিড়ে বাড়ী জমজমাট। আসন্নপ্রসবা মাতা চারুশীলা সারাদিন রান্নাঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। রাত্রে পূজামণ্ডপের দিকে যাচ্ছিলেন। এমন সময় শুনতে পেলেন তন্ত্রধার ভগবতী ঠাকুর (শ্রী শ্রী ঠাকুরের জেঠামশায়) চিৎকার করছেন , "লগ্ন বয়ে যাচ্ছে। মিষ্টির থালা কই ?" সামনে ছিলেন মাতা চারুশীলা। চিনির থালা হাতে করে ত্রস্তপদে এগিয়ে গেলেন পূজামন্ডপের দিকে। উঠোনে নেমে দু' এক পা যেতে না যেতেই হোঁচট খেলেন। চিনির থালা হাত থেকে পড়ে গেল। কি হয়েছে বুঝবার আগেই দেখেন, একটি জ্যোতির্ময় শিশু মাটিতে শুয়ে হাত পা ছুঁড়ছেন, বুঝে-ভরা দৃষ্টিতে পরিবেশ বিচার করছেন। শরীরে তাঁর কোন ক্লেদ-পঙ্কিলতার চিহ্ন নেই। মনে হচ্ছে, যেন কেউ তখনই স্নান করিয়ে শিশুটিকে শুইয়ে দিয়ে গেছে। কিন্তু শিশু কোন শব্দ করছেন না। সাতবার শঙ্খধ্বনি করে মহিলারা জানিয়ে দিলেন পুত্রসন্তানের শুভাগমন। ভগবতী ঠাকুরের হাত থেকে ঘন্টা পড়ে গেল ---- সর্বনাশ! অশৌচ! মায়ের পূজায় বিঘ্ন হলো। নিরীহ ছাগশিশু হয়তো সেদিন যূপকাষ্ঠের থেকে মুক্তি পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল।
শিশুঠাকুরের আবির্ভাবের মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনা হচ্ছে যে, মাতা চারুশীলা কোন প্রসব বেদনাই অনুভব করেন নি। বিনা প্রসব বেদনায় সুপ্রসব হয় না ---- এটাই সাধারণ নিয়ম। তাছাড়া মাতৃজঠরে দশ মাস দশ দিন কূর্মাসনে থেকে যখন শিশু ভূমিষ্ঠ হয়, তার দেহ থাকে ক্লেদ-পঙ্কিলতায় ভরা। তাই জন্মের পরে শিশুর দেহ ধুয়ে পরিষ্কার করতে হয়। শিশু ঠাকুরের বেলায় এখানেই পরম আশ্চর্য ----- আবির্ভাব মুহূর্তেই তাঁর দেহ ছিল নির্মল শুচিশুভ্র, যেন সেই মুহূর্তে কোন অদৃশ্য শক্তি তাঁকে স্নান করিয়ে শুইয়ে দিয়ে গেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, তিনি কি মাতৃজঠর থেকেই ভূমিষ্ঠ হন, না অন্য কোন অজানা শক্তির প্রকাশে আবির্ভূত হন। পূজামন্ডপে আলো ছিল ঠিকই, কিন্তু প্রাঙ্গণে তেমন আলো ছিল না। সেই আলো-আঁধারি পরিবেশের মধ্যেও শিশুর দেহ আপন জ্যোতিতে ঝলমল করছে। তাঁর বুঝে-ভরা নয়ন-যুগল সবার গতিবিধি লক্ষ্য করছে --- এর কোনটাই সাধারণ নবজাতকের মধ্যে দেখা যায় না। পরবর্তীকালেও তাঁর দেহনিঃসৃত জ্যোতির আলোয় তাঁর সাথীরা অন্ধকার জঙ্গলাকীর্ণ পথ অতিক্রম করেছে, এমনকি সেই আলোয় কেউ কেউ পড়াশুনাও করেছে। সুতরাং শিশুঠাকুরের আবির্ভাব যে চিরাচরিত স্বাভাবিক জন্মের পর্যায়ে পড়ে না, সেটি যেমন কয়েকজনের কাছে সেদিন ফুটে উঠেছিল, আজও তেমনি সূক্ষ্ম-বিচারে ফুটে উঠছে। তবে চারুশীলারূপী মা যশোদা যাঁকে সন্তানজ্ঞানে কোলে তুলে নিয়েছিলেন, সে শিশুটি কে এবং কিভাবে এলেন ?
..... যাই হোক, জন্মমুহূর্তের ঘটনাবলী অনুধাবন করলে দেখা যায়, শিশুঠাকুর মাটিতে শুয়ে হাত পা ছুঁড়ছেন, চারিদিকে লক্ষ্য রাখছেন, কিন্তু তখনও পর্যন্ত কোন শব্দ করেন নি। আত্মীয় অভ্যাগতরা আসন্ন কালীপূজার উৎসব থেকে বঞ্চিত হয়ে ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েছেন আর শিশুর সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছেন। কেউ বলছেন, " এ কোন্ কালাপাহাড় এলো, মায়ের পূজা পণ্ড করে দিল ? " আবার কেউ বলছেন, " একটা বোবা ছেলে এসে মায়ের পূজা নষ্ট করলো। " শিশু ঠাকুরের দিদিমা শশীমুখী, জেঠীমা মনোরমা দেবী এবং জেঠামশাই সুন্দর ঠাকুর কিন্তু আবির্ভাবের অলৌকিকতা লক্ষ্য করলেন। তাই মনোরমা দেবী হেঁট হয়ে শিশুকে বললেন, "তুমি একবার কেঁদে দেখাও তো, যে তুমি বোবা নও।" শিশু জেঠিমার কথা রাখলেন। তিনবার তারস্বরে চিৎকার করে বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি আর যাই হোন সুরে ভরপুর। দিদিমা শশীমুখী দেবী বুঝেছিলেন যে, এই শিশুর আগমন এক শুভ ইঙ্গিত বহন করে আনছে। তাই তিনি ঘটে ফুল দিয়ে মায়ের পূজা সমাপন করতে নির্দেশ দিলেন। নিষ্ঠাবান বৈদিক বাড়ীতে জন্ম নিয়েও সুন্দর ঠাকুর সব সংস্কার বিসর্জন দিয়ে শিশুর কোষ্ঠী বিচার করতে বসলেন। শাস্ত্রমতে ছয়দিন পার না হলে কোষ্ঠী বিচার করা নিষিদ্ধ। সুন্দর ঠাকুর জ্যোতিষশাস্ত্র বিশারদ হয়েও শাস্ত্রের বিধান উপেক্ষা করলেন। কারণ তিনি বুঝেছিলেন যে, এইভাবে যিনি আসতে পারেন, তিনি অনন্তবিশ্বের নিয়ামক ছাড়া কেউ নয়। সুতরাং তাঁর ক্ষেত্রে কোন বিধানই প্রযোজ্য নয়। কোষ্ঠী বিচার করে আনন্দে আত্মহারা হয়ে সুন্দর ঠাকুর চোখের জল ফেলতে ফেলতে বললেন, " তোমরা সবাই আনন্দ কর। আমাদের সাতপুরুষ উদ্ধার হয়ে গেলো। এঁ কালাপাহাড় নয়, এঁ যে কালাচাঁদ , আজন্ম সন্ন্যাসী। এঁর বৃহস্পতি তুঙ্গে, সব তুঙ্গে ।" সেই মুহূর্তে সেই পাগল সাধক, যিনি মনসা পূজার দিন বলে গিয়েছিলেন, " ওরে সে আসছে রে আসছে " এসে উপস্থিত হলেন । " এসেছে রে এসেছে , আমায় একটু দেখতে দে " ----- বলে তিনি এগিয়ে গেলেন । সবাই তাঁকে ধরলো, " কে এসেছে " বলতে হবে ।
" পরে বুঝবি, পরে বুঝবি " ----- বলতে বলতে পাগল সাধক দ্রুতপদে চলে গেলেন।
স্বতঃস্ফূর্তভাবে অলৌকিক বিভূতির প্রকাশ শিশুবয়স থেকেই ঠাকুরের মধ্যে দেখা যায়। জগতের ইতিহাসে তাঁর তুলনা মেলা দুষ্কর। প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে আজও অনেকে জীবিত। কোন্ ছয়দিন বয়সের শিশু হাত নেড়ে বৃষ্টি ডেকে আনতে পারে, আবার হাত নেড়ে বৃষ্টি বন্ধ করতে পারে ? কোন্ দেড় -- দুই বছরের শিশু গভীর ধ্যানে মগ্ন হয়ে বসে থাকে, যখন আর সকলে গাঢ় নিদ্রায় অচেতন ? কোন্ দুই বছরের শিশু উঁচু দোতলার ছাদ থেকে পালখের মত মন্থর গতিতে রাস্তায় বৃদ্ধের প্রসারিত হাতের উপর অবতরণ করে খিলখিল করে হাসতে পারে ? কোন্ পাঁচ বছরের শিশু নদীর তরঙ্গসঙ্কুল জলরাশির উপর দিয়ে খেলাচ্ছলে হেঁটে যেতে পারে, আবার কখনও বা সেই জলরাশির উপর ধ্যানাসনে উপবিষ্ট হয়ে ভেসে যেতে পারে ? বিভূতির অন্ত নেই তাঁর ......... !
[ পুস্তক সূত্র ঃ ত্বম্ হি গতিসত্বম্, লেখক ঃ রায়দা , বালক ব্রহ্মচারী অর্গানাইজেশন , ব্রহ্মচারী ধাম , সুখচর , ২৪ পরগণা, ( উত্তর ) , প্রকাশ কাল ঃ ৯ই পৌষ, ১৩৯৩ বড়দিন , ( খ্রীষ্টমাস ডে ) , ১ ৯ ৮ ৬ ]
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
রাম নারায়ণ রাম
পোস্টটি শেয়ার করে নিজের প্রোফাইল এ রেখে দিন কাজে লাগবে।
Tags: Ram Narayan Ram, Beder kormi
বালক ঠাকুর প্রসঙ্গে
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)